প্লেন ভেঙে পড়েছিল, না নিখোঁজ হয়েছিলেন? জানুন নেতাজি রহস্যের আসল গল্প!

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে অন্যতম রহস্যময় চরিত্র নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তাঁর সাহস, নেতৃত্ব, আর "তুমি আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাকে স্বাধীনতা দেব" এই অমর বাণী আজও প্রতিটি ভারতবাসীর হৃদয়ে অনুরণিত। কিন্তু স্বাধীনতার লড়াইয়ের মতোই রহস্যে ঘেরা তাঁর মৃত্যু!

প্রশ্ন আজও জাগে প্লেন ভেঙে পড়েছিল? নাকি তিনি সত্যিই নিখোঁজ হয়েছিলেন?

প্লেন ভেঙে পড়েছিল, না নিখোঁজ হয়েছিলেন?

🔹 ১৮ আগস্ট ১৯৪৫: সেই দিনটি

১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট। জাপানের তাইহোকোন বিমানবন্দর থেকে একটি জাপানি সামরিক বিমান উড়েছিল, গন্তব্য ছিল মাঞ্চুরিয়া। বিমানে ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও তাঁর কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী।

বলা হয়, তাইহোকোন বিমানবন্দরের কাছে সেই বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ে যায়।

জাপানিরা জানায়, নেতাজি গুরুতর আহত হন, এবং কিছু ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়।

কিন্তু প্রশ্ন এখানেই দুর্ঘটনার পর সত্যিই নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল, নাকি এটি ছিল একটি পরিকল্পিত নিখোঁজ হওয়া?

🔹 সরকারি তদন্ত ও গোপন নথি

স্বাধীনতার পর ভারত সরকার নেতাজির মৃত্যুর তদন্তে তিনটি কমিশন গঠন করেছিল।

  • শাহনওয়াজ কমিশন (1956)
  • খোসলা কমিশন (1970)
  • মুখার্জি কমিশন (1999)

প্রথম দুটি কমিশন বলেছিল নেতাজি প্লেন দুর্ঘটনাতেই মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু মুখার্জি কমিশন (2006) দাবি করে “প্লেন দুর্ঘটনার কোনো প্রমাণ নেই। নেতাজির মৃত্যু হয়নি।”

🔹 গোপন ফাইলের রহস্য

২০১৫ সালে ভারত সরকার নেতাজির ওপর থাকা গোপন ফাইলগুলো প্রকাশ করে। এই নথিতে দেখা যায়, স্বাধীনতার পরও নেতাজির পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের ওপর নজরদারি চলত।
এতে আরও প্রশ্ন জাগে?

👉 যদি নেতাজি সত্যিই মারা যেতেন, তবে তাঁর পরিবারকে এতদিন নজরে রাখা হলো কেন?

🔹 গুমনামি বাবা তত্ত্ব

উত্তর প্রদেশের ফৈজাবাদে এক রহস্যময় সাধু থাকতেন, যাঁকে মানুষ ডাকত ‘গুমনামি বাবা’ নামে।

অনেকে বিশ্বাস করেন, সেই গুমনামি বাবাই ছিলেন আসলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, যিনি নিজের পরিচয় লুকিয়ে দেশেই থেকে গিয়েছিলেন।
তাঁর ঘরে পাওয়া চিঠি, বই, এবং নেতাজির সঙ্গে মেলে এমন নথি এই তত্ত্বকে আরও জোরদার করে।

🔹 নেতাজির শেষ কথা: ইতিহাস না রহস্য?

আজও পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে নেতাজি বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন।
একইভাবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়নি যে তিনি জীবিত ছিলেন।

কেউ বলেন, তিনি রাশিয়ায় গিয়েছিলেন; কেউ বলেন, তিনি ভারতে ফিরে এসেছিলেন।
কিন্তু সত্য আজও ইতিহাসের গহীনে হারিয়ে আছে।

🔹 শেষ কথা:

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু শুধু একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী নন তিনি ভারতের এক চিরন্তন রহস্যের নাম। হয়তো একদিন কোনো নতুন প্রমাণ, কোনো অজানা সত্য আমাদের জানাবে তাঁর জীবনের শেষ অধ্যায়। ততদিন পর্যন্ত নেতাজি আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন এক অমর নায়ক হিসেবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
sr7themes.eu.org